আলেকজান্ডার ও আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণ

জন্ম ও বংশ পরিচয়:-

  • আলেকজান্ডার ৩৫৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রাচীন গ্রীকের ম্যাসিডন রাজ্যের পেল্লা নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ম্যাসিডনের রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ ও তার চতুর্থ স্ত্রী অলিম্পিয়াসের পুত্র ছিলেন।
  • প্রথম জীবনে ষোল বছর বয়স পর্যন্ত আলেকজান্ডার দার্শনিক অ্যারিস্টটলের নিকট শিক্ষালাভ করেন।
  • ৩৩৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মাত্র ২০ বছর বয়সে পিতা দ্বিতীয় ফিলিপের মৃত্যুর পরে ম্যাসিডোনিয়ার সিংহাসনে বসেন।
  • তিনি ছিলেন আর্গিয়াদ রাজবংশের একজন রাজা।

ভারত অভিযান:-

  • “পৃথিবীর শেষপ্রান্তে” পৌছনোর স্পৃহায় তিনি ভারত অভিযান শুরু করেন।
  • আলেকজান্ডার খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭ অব্দে হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে ভারত অভিমুখে অগ্রসর হন।
  • খ্রিস্টপূর্ব ৩২৬ অব্দে তিনি ভারত নাম ভূখণ্ডে পদার্পণ করেন।
  • তক্ষশীলার রাজা অম্ভি বিনাযুদ্ধে আলেকজান্ডারের বশ্যতা স্বীকার করে নেন।
  • ক্রমে আলেকজান্ডারের ভয়ে ভীত কোফিউস, অশ্বজিৎ, শশীগুপ্ত প্রভৃতি রাজারা আলেকজান্ডারের বশ্যতা স্বীকার করে নেন।
  • পুষ্করাবতীর রাজা অষ্টক গ্রিকসেনাবাহিনী কর্তৃক ৩০ দিন অবরুদ্ধ অবস্থায় যুদ্ধ করে প্রাণত্যাগ করেন।
  • আলেকজান্ডারের ঘোড়ার নাম ছিল বুসেফেলাস। বুসেফেলাস হিদাসপিসের যুদ্ধের পরে মারা যায়। বুসেফেলাসের সমাধি রয়েছে পাকিস্তানের জালালপুর সেরিফে ।
  • ঝিলাম ও চেনাব নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলের রাজা পুরুর কাছে আলেকজান্ডার ঝিলাম বা হিদাসপিসের যুদ্ধে প্রবলভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রাভি নদীর উপকূলবর্তী রাজ্যসমূহ দখল করেন এবং বিপাশা নদী পর্যন্ত অগ্রসর হন।
  • আলেকজান্ডার প্রায় ১৯ মাস ভারতে ছিলেন।
  • দীর্ঘ সময় ভারতের থাকার কারণে আলেকজান্ডারের সেনারা দেশে প্রত্যাবর্তনে উণ্মুখ হয়ে পড়লে আলেকজাণ্ডার ভারত অভিযান বন্ধ করে গ্রিসে প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন।
  • আলেকজান্ডারের মৃত্যু : বাড়ি ফেরার পথে ব্যাবিলনে ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মাত্র ৩২ বছর বয়সে আলেকজান্ডারের মৃত্যু হয় সেন্ট হেলেনা দ্বীপে।

আলেকজান্ডারের আক্রমণের প্রভাব:-

  • ভারতকে ইউরোপের কাছে উন্মুক্ত করেছিল, চারটি স্বতন্ত্র যোগাযোগের লাইন খোলার মাধ্যমে, তিনটি স্থলপথে এবং একটি সমুদ্রপথে।
  • আলেকজান্ডার এথেন্সের অনুকরণে প্যাঁচার চাপযুক্ত স্বর্ণমুদ্রা এবং ড্রাকম নামক রৌপ্য মুদ্রা চালু করেছিলেন ।
  • সাংস্কৃতিক সংস্পর্শের কারণে গান্ধার শিল্পের প্রসার ঘটে।
  • ছোট রাজ্য দুর্বল করে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যর অধীনে উত্তর ভারতের একীকরণের পথ প্রশস্ত করেছিলেন।